অনলাইন ডেস্ক | ১৯ মার্চ ২০১৭
এখন থেকে উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি সংশোধনের জন্য দাখিল করা কোনো আবেদন পাঁচ দিনের বেশি আর ঝুলে থাকবে না। বিষয়টি খুব কঠোরভাবে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে ১ লাখ ২১ হাজার আবেদন অনিষ্পত্ত অবস্থায় উপজেলায় নির্বাচন কার্যালয়গুলোতে পড়ে ছিল। সম্প্রতি বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিশেষ ব্যবস্থায় তা নিষ্পত্তি করে নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাকে পাঁচদিনের বেশি কোনো আবেদন ফেলে না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ইসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপ-সচিব পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এনআইডি সংশোধন, স্থানান্তর বা হারানো কার্ড দ্রুত উত্তোলনের কাজে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনেক সময় অনৈতিক অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আসে। অর্থ পেলে কর্মকর্তারা দ্রুত ফাইল ঢাকায় পাঠান। নইলে নিজের কার্যালয়েই মাসের পর মাস ফাইল ফেলে রাখেন।
এর একজন ভুক্তভোগী আসলামুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে জানান, প্রায় দুই বছর আগে তার বাবার এনআইডি সংশোধনের আবেদন ময়মনসিংহে জমা দেওয়া হয়। নিজে ময়মনসিংহ গিয়ে শুনানিতেও অংশ নেন। অথচ নির্বাচনের ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে তা আটকে রাখেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা।
এমন আরেকজন ভুক্তভোগী টাঙ্গাইলের নুরজাহান আক্তার। তিনি জানান, তার আবেদনটি দেড় বছর পর নিষ্পত্তি হয়েছে গত সপ্তাহে।
অথচ নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, প্রতিটি আবেদন অবশ্যই এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান রয়েছে। হতে পারে আবেদনকারীর আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। তেমন হলে একমাসের মধ্যেই জানিয়ে দিতে হবে।
এসব বিষয়ে এনআইডি শাখার পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, অনেকের অভিযোগ খতিয়ে দেখে বিষয়টির সত্যতা পাওয়ায় বিশেষ কায়দায় প্রায় দেড় লাখ আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কোনো আবেদন উপজেলায় দাখিল হলে তা পাঁচ দিনের মধ্যে ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
শুধু তাই নয়, কোনো আবেদনকারী যদি প্রয়োজনীয় কাগজ জমা না দিতে পারেন, তবে সে আবেদন গ্রহণ না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আর যদি কাগজ ঠিক থাকে সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন অফিসার সে আবেদন রিসিভ করে পাঁচ দিনের মধ্যে ঢাকায় এনআইডি শাখায় পাঠাবেন। এনআইডি শাখা পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য সিদ্ধান্ত উপজেলায় জানিয়ে দেবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবার তা আবেদনকারীকে জানাবেন। এভাবে একমাসের কত আবেদন পাওয়া গেল, কতগুলোর নিষ্পত্তি হলো তা উপজেলা অফিস নোটিশবোর্ডে টানিয়ে দেবে। আর এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন থেকে কোনো নির্বাচন কার্যালয় কোনো আবেদন পেন্ডিং রাখলে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আব্দুল বাতেন আরো বলেন, অনেকেই আছেন কাগজপত্র ঠিক মত দেন না। এ কারণে সংশ্লিষ্ট অফিসার তা জমা না নিলে অভিযোগ করেন। আবার আমাদের কর্মকর্তাদেরও সমস্যা আছে। এদেরও অনেকেই টাকা-পয়সা দিলে ব্যবস্থা নেন।নইলে কাজ না করে ফেলে রাখেন। তবে এখন সে সুযোগ কমে আসবে।
২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে। এর ভিত্তিতে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সেসময় বড় উদ্দেশ্য না থাকায়যেনতেন প্রকারে কাজ সম্পন্ন করায় এক শতাংশ নাগরিকের এনআইডির বিভিন্ন তথ্যে ভুল থেকে যায়। এছাড়া অনেকেই ঠিকানা পরিবর্তন করে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেন। আবার অনেকের কার্ড হারিয়ে গেলেও আবেদন করতে হয়। এ সংক্রান্ত আবেদনগুলোই দিনের পর দিন থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পড়ে থাকে।
বর্তমানে দেশে ১০ কোটি ১৭ লাখের বেশি ভোটার আছেন। এদের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র আছে ৯ কোটি নাগরিকের। স্মার্টকার্ডে সঠিক তথ্য সংযোজনের জন্য কিংবা চাকরির জন্য এনআইডি সংশোধন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |