অনলাইন ডেস্ক | ২১ মার্চ ২০১৭
‘রাইতে পোলা ২০০ টাকা চাইছিল। আমার লগে টাকা আছিল না। রাগ কইরা চইলা গেল। পোলা আমার ঢাকার পথঘাট চেনে না। রাত দুইটায় খবর পাইয়া হাসপাতালে গিয়া দেখি লাশ। মামলা কইরা কী হইব! পোলা তো পামু না।’
সড়ক দুর্ঘটনায় ছোট ছেলে মো. শহীদ (১৮) নিহত হওয়ার পর কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বলছিলেন আবুল কালাম নামের ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। গতকাল সোমবার রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় মিরপুরের সনি সিনেমা হলের সামনের সড়কে পড়ে ছিলেন শহীদ। মিরপুর থানার পুলিশ সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সেখানে দিবাগত রাত তিনটার দিকে শহীদকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত যানের ধাক্কায় শহীদ মারা গেছেন। ঘাতক যানটিকে শনাক্ত করা যায়নি।
চিকিৎসা করাতে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর রামগঞ্জ থেকে ঢাকায় বাবার কাছে এসেছিলেন শহীদ। এ কথা জানিয়ে আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, পেটে ব্যথার কারণে চিকিৎসক দেখাতে গত রোববার রাতে শহীদ ঢাকায় আসে। ওঠে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএনপি বস্তির পাশে বাবার বাসায়। বাবা আবুল কালাম সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্ব পালন করেন। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ভাত খেয়ে বাবার কাছে শহীদ ২০০ টাকা চান। বলেন, গুলিস্তান যাবেন। কিন্তু আবুল কালামের কাছ টাকা ছিল না। তাই রাগ করে চলে যান শহীদ।
ছেলের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘আমার চার পোলা, এক মাইয়ার মধ্যে শহীদ সবার ছোট। রামগঞ্জে মোবাইলের দোকানে কাম করত। কাল রাগ কইরা চইলা গেলে চিন্তায় ছিলাম। কারণ, ও ঢাকার পথঘাট চেনে না। পরে যখন দেখলাম, তখন ওর মাথায় রক্ত ছিল। চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। পা দুইডা ভাইঙা গেছে।’
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাত যানবাহনের ধাক্কায় ছেলেটি মারা গেছেন। এখন এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
পুলিশ যানটি খুঁজে পাক বা না পাক, শহীদের লাশ কাঁধে নিতে হবে বাবা আবুল কালামকে। এ জন্য তাঁকে মিরপুর থানা থেকে কাগজপত্র বুঝে নিয়ে ছুটতে হবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |