নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ নভেম্বর ২০১৭
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবন থেকে চুরি হওয়া তিন মাসের শিশু কন্যা জিমকে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফতুল্লা থানা এলাকার একটি মার্কেট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ফতুল্লা থানার এসআই রোখসানা আক্তার বলেন, শাহবাগ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ফতুল্লা থানা পুলিশের এসআই সাইফুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম শিশু জিমকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় ঢামেক হাসপাতালের উপ-পলিচালককে প্রধান করে তিনসদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ফতুল্লা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুর রহমান জানান, জিমের খালাতো ভাই রাফসান তাকে ১০ হাজার টাকায় ফতুল্লার কাশিপুর খিলমার্কেটের বাসিন্দা মশিউর রহমান জুয়েলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। তিনি বলেন, জিমের বাবা যে ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন, সেই একই ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন মনোয়ারা বেগমের শ্বশুর। মশিউর-মনোয়ারা দম্পতি নিঃসন্তান। সোমবার দিবাগত রাতে জিমের খালাত ভাই রাফসান ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে জিমকে মনোয়ারা বেগমের কাছে বিক্রি করে দেয় বলে দাবি করেছেন মনোয়ারা বেগম। এসআই সাইফুর বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আমরা এসব তথ্য পেয়েছি। তবে রাতে শিশুটিকে কিভাবে হাসপাতাল থেকে বের করা হলো কিংবা আসলেই শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছিল কিনা এগুলো তদন্ত করে দেখতে হবে। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখলে এসব বিষয় আরও স্পষ্ট হবে।
পুলিশ ও চুরি যাওয়া শিশুর পারিবারিক সূত্র জানায়, তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলায়। গত ৩১ অক্টোবর জুয়েল ঢামেক হাসপাতালের ৭০১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ নম্বর বেডে ভর্তি হন। সোমবার পাশের ৪১ নম্বর বেডটি খালি থাকায় শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন সুমাইয়া। জুয়েলের ভাতিজা ফরাজি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ ঘুম ভাঙলে সুমাইয়া দেখেন তার মেয়ে কোলে নেই। তখনই কান্নাকাটি শুরু করেন তিনি। পরে অন্যান্য রোগী, রোগীর স্বজন ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছুটে আসেন। তবে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও জিমকে কোথাও পাওয়া যায়নি।
শিশুটির মা সুমাইয়া জানান, তাদের পাশে ৪১ নম্বর বেডে সিদ্দিক নামের এক রোগী ছিল। তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগী সিদ্দিকের সঙ্গে তার ছেলে জুয়েল ছিলো। জুয়েল তাকে বলেছিলো, ‘আমার কোন সন্তান নেই। আপনার তো ৪টি মেয়ে। এই মেয়েটাকে (জিম) আমাকে দিয়ে দেন। আমি ওকে লালন-পালবা করবো’। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘নিজের মেয়েকে আমি দিবো কেনো। এটা কি সম্ভব! একথা শুনে জুয়েল তাদের বলে ‘যাওয়ার সময় আমি শিশুটিকে নিয়ে যাবো, না দিলে চুরি করে নিয়ে যাবো’। স্বজনদের সন্দেহ জুয়েলই জিমকে চুরি করে নিয়ে গেছে।
এদিকে শিশু চুরির ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ঢামেক কর্তৃপক্ষ। ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ফাইন্যান্স) বিদ্যুত কান্তি পালকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা.কে এম তারিক বলেন, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে শিশু চুরির ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আবু জাহের ও উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সাইদুজ্জামান।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |