নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭
মোটা অঙ্কের বিলের টাকা দিতে না পারায় নবজাতককে আটককে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। টাকা জোগাড় করতে না পেরে চারিদিকে অন্ধকার দেখছেন রিকশাচালক বাবা বেলাল হোসেন ও তার স্ত্রী মুন্নী। এমনকি সন্তানকে দেখতে হাসপাতালেও যেতে পারছেন না তারা। এখন শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। আজ বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ করেছেন শিশুটির বাবা-মা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত দুইদিন ধরে শিশুটির বাবা-মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বিল পঞ্চাশ হাজারের বেশি হয়েছে।
বেলাল হোসেন জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের বসেরখালি এলাকায়। পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই বসবাস করছেন। গত ৩ ডিসেম্বর তার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর কিছু সমস্যা দেখা দিলে তিনি প্রথমে শ্যামলী শিশু হাসপাতাল ও পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই বলে অন্য কোথাও চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে দুই হাসপাতাল থেকেই তাদের ফেরত দেওয়া হয়।
এরপর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘বড় খালা’ নামে পরিচিত একজন নারী তাদের একটি ভিজিটিং কার্ড দেন। ওই কার্ডের নম্বরে কল দেওয়ার পর খুব কম খরচে চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি অ্যাম্বুলেন্সও পাঠানো হয়। খরচের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, দুই তিন হাজারে বেশি খরচ হবে না। অসহায় রোগীদের অনেকটা বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলেও জানানো হয় তখন। এ আশ্বাসের পর কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করানো হয়।
কিন্তু দুই দিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৪ হাজার ৬৫০ টাকা বিল হয়েছে। কিন্তু টাকার কোনো বিলের টাকার কোনো ব্যবস্থা করতে না পেরে আর হাসপাতালে যাননি। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষতার স্ত্রীকে হুমকি দিলেও সেও নাস্তা আনার কথা বলে চলে আসে। এখন গেলেই বেধে রাখবে বলে কান্না করতে করতে ছেলেকে ফেরত চান বেলাল।
বড় খালার দেয়া ভিজিটিং কার্ডে যার পরিচয় দেওয়া রয়েছে তিনি হলেন, বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হাসপাতালের অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার মো. তাজুল ইসলাম (পলাশ)। তিনি জানান, ‘আমাকে রোববার একজন ফোন করেছিলেন। আমি বলেছিলাম আমাদের ট্রমাতে আসার জন্য। কিন্তু তারা আসেন নি। তারা গেছেন কেয়ার হাসপাতালে।’
কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিলিং সেকশনের এক্সিকিউটিভ অফিসার নর কুমার উত্তম বলেন, আমরা কাউকে আটকে রাখেনি। শ্বাসকষ্ট নিয়ে রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি নবজাতককে ভর্তি করানো হয়েছিল। এখন সে এনআইসিইউ-২ তে ভর্তি আছে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে ওই রোগীর সঙ্গের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত তাদের বিল হয়েছে ৬৪ হাজার ৩৫৪ টাকা। ভর্তির সময় তারা এক হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বাকি টাকাও পরিশোধ করা হচ্ছে না, পরিবারের কেউ আসছেও না।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর জানান, আমার কাছে এমন কোনও অভিযোগ বা তথ্য আসেনি। আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |