বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো বাংলাদেশেও খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীরা নানা আয়োজনে উদযাপন করছে যিশু খ্রিস্টের জন্মতিথি বড়দিন। এ উপলক্ষে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। ক্রিসমাস ট্রি থেকে ঝুলছে আলোর মালা। বানানো হয়েছে খ্রিস্টের জন্মের ঘটনার প্রতীক গোশালা। সেই সঙ্গে বড় দিনের কেক তো আছেই। সোমবার বড়দিন হলেও আগের রাত থেকেই উৎসবে মেতে উঠেছেন খ্রিস্টানরা, তাদের বাড়ি বাড়ি চলছে উৎসব। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, যিশুখ্রিষ্টের মতে মানুষের পরিত্রাণের উপায় হল জগতের মাঝে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থান। পূর্ণ অন্তর, মন ও শক্তি দিয়ে তিনি ঈশ্বর ও সকল মানুষকে ভালোবাসতে শিক্ষা দিয়েছেন।“জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ সমস্যাসঙ্কুল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি।”
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ আবহমানকাল ধরে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ।“বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। আমি একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব দেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, ন্যায়, শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রবর্তন করা ছিল যিশুখ্রিস্টের অন্যতম ব্রত। “বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য মহামতি যিশু নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার ন্যায়, জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।আজকের সমাজব্যবস্থায় তার শিক্ষা ও আদর্শগুলোকে অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
রোববার রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন গির্জা ও উপাসনালয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড় দিনের উদযাপন। সেখানে মঙ্গলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়। সোমবার সকালে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালে হয় বড় দিনের প্রার্থনা। এছাড়া সকাল থেকেই বিভিন্ন চার্চ, বাড়ি এবং হোটেলগুলোতে চলছ নানা অনুষ্ঠান। বিশেষ করে শিশুদের জন্য আলাদা আয়োজন করেছে হোটেলগুলো। সেখানে শিশুদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের খেলার আয়োজন। প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ‘সান্তাক্লজ’ আসবেন নানা উপহার ও চমক নিয়ে।