অন্য বছরের তুলনায় এবারের মেলার অভ্যন্তরীণ সাজ-সজ্জা বেশ সুগঠিত। মেলায় চলাফেরার স্থান প্রশস্ত করার এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন দর্শনার্থীরাও। মেলার পশ্চিম পাশে গৃহস্থালী পণ্য নোয়ার প্যাভিলিয়ন ব্যবস্থাপক সনজু কুমার বলেন, গত চারদিন দর্শনার্থীর চাপ না থাকলেও আজ সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বেচাকেনার হারও বেড়েছে।
গত বছরের তুলনায় এবার মেলার শুরু থেকেই ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি বলে মনে করেন তিনি। গত বছর মেলার শুরুর দিকে দর্শক উপস্থিতি যা ছিল এবার শুরু থেকেই উপস্থিতি তার চেয়ে বেশি দেখা গেছে। তবে আজকের উপস্থিতি বাণিজ্য মেলার চিরচেনা রূপকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। আসলে এই ভিড়-বাট্টাই বাণিজ্য মেলার প্রাণ, মেলার আসল রূপ। মেলায় দেশীয় কোম্পানি কিয়াম ও নোয়ার নন স্টিক কড়াই-ফ্রাই প্যান ক্রেতাদের বেশি আকর্ষণ করছে। তবে দামে কিছুটা সাশ্রয়ী চীন থেকে আসা নন-স্টিক প্যানগুলোও বিক্রি হচ্ছে বেশ।
মেলার মধ্য মাঠে ফোয়ারার কাছে কথা হয় পুরান ঢাকার বাসিন্দা সাজেদা আক্তার বীণার সঙ্গে। তিনি বলেন, বহু বছর ধরেই বাণিজ্য মেলার নিয়মিত দর্শনার্থী তিনি। তবে এবার মেলা মাঠে ঘুরে অন্য বছরের তুলনায় স্বস্তিকর মনে হয়েছে তার কাছে।স্টল ও অলিগলির সংখ্যা কমিয়ে খোলা মেলা জায়গা রাখা হয়েছে বেশি। অন্য বছরের তুলনায় এবারের প্যাভিলিয়নগুলো একটি বেশি আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে। এছাড়া ময়লা আবর্জনা অন্য বছরের তুলনায় কম। খাবারের দোকানগুলোর সামনে ছোট-বড় ঝুড়ি দেওয়া আছে ময়লা ফেলার জন্য,” বলেন বীণা।
মেলার মধ্য ভাগেই আকতার, হাতিল, ব্রাদার্স, রিগেলসহ অন্যান্য ফার্নিচারগুলোর বহুতল প্যাভিলিয়ন। এখানেই রয়েছে ভিশন, অলিম্পিক, ওয়ালটনসহ বড় কোম্পানিগুলোর প্যাভিলিয়ন। পশ্চিমে বিদেশি ইন্ডিয়া, ইরান, থাইল্যান্ডের প্যাভিলিয়ন রয়েছে। কিছু বিদেশি প্যাভিলিয়ন রয়েছে পূর্ব দিকেও। এসব দেশীয় ফেব্রিক্স, গৃহস্থালী, খেলনা, হার্বালপণ্য, অলঙ্কার, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য পণ্যের স্টলগুলো রয়েছে মাঝ মাঠ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকের গলির দুই পাশ জুড়ে।
তাইওয়ান থেকে পাণি বিশুদ্ধকারী যন্ত্রাংশের আমদানিকারক এ হোসাইন ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী জীবন বালেন, ঢাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দীর্ঘদিনের। তাইওয়ান থেকে আমদানি করা তাদের পানির ফিল্টারগুলো সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মেলা খুবই উপযোগী একটি স্থান। আমরা দর্শনার্থীদের কাছে পণ্যের গুণগত মান তুলে ধরি। অনেকে মেলা প্রাঙ্গণেই বুকিং দিয়ে যান,” বলেন জীবন। এ বারের মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি অন্যবারের তুলনায় বেশ সন্তোষজনক বলে স্বীকার করেন এই ব্যবসায়ী।
মেলায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা প্রণব কুমার প্রামাণিক বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার হোটেল রেস্তোরাঁগুলো বেশ সতর্কতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। এর পরেও কেউ যদি নির্ধারিত মূল্যের অধিক টাকা ভোক্তাদের কাছ থেকে আদায় করে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। আমাদের টিম সব সময় প্রস্তুত আছে। কেউ অভিযোগ করলে আমরা সাথে সাথেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রথম চারদিনে ভোক্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হয়েছে।