নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ জানুয়ারি ২০১৮
রাজধানীর ভাষানটেকে তাজুল ইসলাম (৪০) নামে এক রিকশা চালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে কয়েকজন রিকশা চালক। গতকাল মঙ্গলবার রাতে লালসরাই ১৫ নম্বর জাহাঙ্গীরের বস্তির পিছনে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও নিহতের পরিবার বলছে, যৌথ রিকশার মালিকানা নিয়ে চালক আল-আমিন তার সহযোগীদের নিয়ে তাজুলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ৬জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহতের শ্যালক আবুল বাশার জানান, তাজুলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার দিঘদাইর গ্রামে। লালসরাই ২৫/১ নম্বর হাশেমের বাড়িতে ২ ছেলে ও স্ত্রী নার্গিস আক্তারকে নিয়ে থাকতেন। ২ মাস আগে আল-আমিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ভাগে একটি রিকশা কিনেন। রিকশাটি চালাতো তাজুল নিজেই। কিন্তু রিকশার ভাড়ার টাকা নিয়ে মাঝে মধ্যে তাদের বাকবিতন্ডা হতো।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আল-আমিন তাজুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাত ১১টার দিকে আল-আমীনের সহযোগী ইদ্রিস তাদের ফোন দিয়ে বলে, তাজুল আহতাবস্থায় বস্তির পিছনে পড়ে আছে, তাকে স্থানীয় মার্কস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারা ওই হাসপাতালে গিয়ে তাজুলকে উদ্ধার করে হৃদরোগ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাজুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভাষানটেক থানার ওসি মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, নিহত তাজুল ও আল-আমিন শেয়ারে একটি রিকশা কিনে। কিন্তু ক্যান্টমেন্ট এলাকায় রিকশা চালাতে হলে অনুমতি হিসেবে একটি নম্বর প্লেট নিতে হয়। তাজুলের নামে তারা নম্বর প্লেটও নেয়। ইদানিং রিকশার মালিকা নিয়ে তাজুল ও আল-আমিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিয়ে তারা একাধিকবার বসে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার রাতে এই ঝামেলা নিয়ে বসার কথা বলে আল-আমিন তাজুলকে বাসা থেকে ডেকে নেয়। এবং কয়েকজনে মিলে মীমাংসার চেষ্টা করে। হয়তো বিষয়টি তাজুল মানতে চাচ্ছিলো না, তাই আল-আমিন ও বাকি পাঁচজনে মিলে তাজুলকে ছুরিকাঘাতে ও আঘাত করে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই থানার এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন,তাজুলের মাথার বিভিন্ন জায়গাসহ শরীরের বেশকিছু জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর রাতে দুইজনকে এবং গতকাল সকালে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো- আল আমিন, আবুল হাসেম, জিয়া, মতিউর রহমান ওরফে মতিন, ইদ্রিস আলী শেখ ও সেলু ভূঁইয়া। আজ তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।