নিজস্ব প্রতিবেদক | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
রাজধানীর শ্যামপুরে লাবনী (১২) বছরের একটি শিশু গৃহকর্মীকে গরম পালি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে গৃহকর্তীর বিরুদ্ধে। আজ দুপুরে নির্যাতনের খবর পেয়ে নতুন আলী বহরের বিক্রমপুর হাউজিংয়ের একটি বাড়ির ছয় তলার ফ্ল্যাট থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে কদমতলী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্তী মারিয়া সুলতানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
শিশুটির অভিযোগ, ওই বাসায় গত দুই বছর ধরে কাজ করে সে। কাজে যোগ দেয়ার পর থেকেই তার উপর নির্যাতন চালাতো মারিয়া। কিন্তু নিজের আপনজন কিছু না থাকায় সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করতো। শিশুটি জানায়, তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লালকুটিতে। শিশুটির মা অন্ধ থাকায়, ওর বাবা নাছির আরেকটি বিয়ে করে গ্রামে বাস করেন। আর অন্ধ মা তার বাবার বাড়িতে বাস করে। প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা বেতনে তাকে এক স্বজনের মাধ্যমে ওই বাসায় কাজে দেয়া হয়। কিন্তু মাস শেষ হতে না হতেই টাকাটা শিশুটির বাবা নিয়ে যান বলে অভিযোগ তার।
নির্যাতনের বর্ননা দিয়ে শিশু লাবনী বলে, চুলায় ভাত রান্না করছিলাম। ভাত একটি বেশি হয়ে যাওয়ায়। গরম ভাতের পাতিল আমার মাথায় ঢেলে দিয়েছে। এছাড়া পানি গরম করে হাতের উপর ফিক মেরেছে। এতে মেয়েটির হাত ও গলা ঝলসে গেছে। প্রতিদিনই মারধর করতে গিয়ে গলা চেপে ধরায় শিশুটির গলায় নির্যাতনের দাগ দেখা গেছে।
জানা গেছে, আজও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিশুটিকে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন করার সময় তার চিৎকার ওই বাড়ির বাসিন্দারা ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায় পুলিশ। উদ্ধার করে শিশুটিকে, আটক করে গৃহকর্তীকে।
ওই বাড়ির বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি গৃহকর্তা তাওহিদকে অনেক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি তার স্ত্রীর প্রতি কোন ব্যবস্থা নেননি। এছাড়া শিশুটিকে মারধর করার সময় প্রতিবেশীরা বাধা দিলে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হতো মারিয়া।
এবিষয়ে কদমতলী থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, নির্যাতনের খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহকর্তী মারিয়া সুলতানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।